AD

নরসিংদীতে আধিপত্য বিস্তারের বলি মাদ্রাসাছাত্রী তাফসিরা: ৪ দিন পর মৃত্যু

 


নরসিংদীর রায়পুরায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে চলমান সংঘাতের শিকার হয়ে গুলিবিদ্ধ মাদ্রাসাছাত্রী তাফসিরা (১২) অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মেনেছে। গত বৃহস্পতিবার (১২ জুন) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত তাফসিরা শ্রীনগর গ্রামের আশরাফ আলীর মেয়ে এবং স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ছাত্রী ছিল।

ঘটনার সূত্রপাত হয় গত ৯ জুন, যখন রায়পুরা উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নে স্থানীয় সোহেল ও তার অনুসারীরা বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াজ মোরশেদ খান রাসেলের সমর্থকদের ওপর দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এই সংঘর্ষ চলাকালীন সময়ে বাজারের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল তাফসিরা। দুর্ভাগ্যবশত, সে এই সহিংসতার শিকার হয়ে গুলিবিদ্ধ হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তাফসিরাকে দ্রুত রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চার দিন ধরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে তার জীবনাবসান হয়।

তাফসিরার ভাই ইয়াছিন মিয়া ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "আমার বোন বাজারে যাচ্ছিল। হঠাৎ সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যায়। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর হাসপাতালে নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত বাঁচানো গেল না। সোহেল ও তার বাহিনীর সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানাচ্ছি।"

গত ৯ জুনের সংঘর্ষের পরপরই পুলিশ সোহেলের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছিল। অভিযানে সোহেলের বাড়ি ও তার আশপাশের এলাকা থেকে দেশীয় অস্ত্র (টেটা-বল্লম), ৫টি চাপাতি, ৭টি ছুরি, লোহার পাইপ, ৮টি মোবাইল ফোন, রেজিস্ট্রেশনবিহীন ২টি মোটরসাইকেল, ১টি ল্যাপটপ, ডিভিআর ও টর্চলাইটসহ বিভিন্ন জিনিস উদ্ধার করা হয়। তবে সোহেল পালিয়ে যাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তার বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্রসহ মোট ১২টি মামলা রয়েছে বলে রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল মাহমুদ জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ৭ ফেব্রুয়ারি একইভাবে ইউপি চেয়ারম্যান রাসেলের বাড়িতে হামলা চালিয়েছিল সোহেল মিয়া ও তার অনুসারীরা। সেই সময় রাসেলকে না পেয়ে তার ইউপি কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয় এবং তার চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রী শান্তা ইসলামকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল মাহমুদ আরও জানান, গুলিবিদ্ধ মাদ্রাসা ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি। পুলিশ পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করছে এবং ধারণা করা হচ্ছে দাফন শেষে তারা মামলা করতে থানায় আসতে

 পারেন।

Post a Comment

0 Comments